চিকিৎসা

হাঁটু ব্যথা কেন হয়, লক্ষণ ও চিকিৎসা

আসসালামু আলাইকুম infobangla57.com আপনাদের সবাইকে স্বাগতম আশা করি আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে সকলের সুস্থ আছেন ভালো আছেন। আজকের পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে।হাঁটু ব্যথা কেন হয়, লক্ষণ ও চিকিৎসাম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য এবং খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিচে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এবং যারা হাটু ব্যাথা সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই প্রতিবেদনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি সহকারে পড়ার আহ্বান জানিয়ে শুরু করছি।

মানবদেহের ওজন বহন করার জন্য যে কটি জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধি রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাঁটু। দেশে হাঁটুব্যথাকে প্রধানত বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। তবে যেকোনো বয়সের মানুষের হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে।

হাঁটুব্যথাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা অনুভূত হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে হাঁটুব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করা গেলে ৭০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যথা ভালো হয়ে যায়।

ব্যথার কারণঃ

সম্মানিত পাঠক বন্ধুগণ হাঁটুব্যথার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বয়সজনিত অস্থিসন্ধির ক্ষয় বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস। এ ছাড়া হাঁটুর লিগামেন্টে আঘাত পাওয়া, অস্থিসন্ধির মাঝে দূরত্ব কমে যাওয়া, অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, বাতসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীদের হাঁটুব্যথায় ভোগার হার বেশি।

উপসর্গঃ

সম্মানিত পাঠক বন্ধুগণ হাঁটুব্যথার পাশাপাশি রোগীর হাঁটু ফুলে যাওয়া, হাঁটুর সন্ধি শক্ত হয়ে যাওয়া, হাঁটু লাল বর্ণ ধারণ করা, হাঁটুতে গরম অনুভব করা—এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ সময় হাঁটাচলা বা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে সমস্যা হয়। চলাফেরার সময় হাঁটু ভাঁজ করলে শব্দ হতে পারে; ব্যথা অনুভূত হতে পারে। হাঁটুর শক্তি কমে যায়। ফলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে গিয়ে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

চিকিৎসা পদ্ধতিঃ

● হাঁটুব্যথায় বরফ কিংবা গরম পানির সেঁক আরাম দিতে পারে। তবে কখন ও কোন প্রক্রিয়ায় সেঁক দেবেন, সেটার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

● আঘাতের কারণে হাঁটুতে ব্যথা হয়, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে বরফ কিংবা ঠান্ডা সেঁক আরাম দিতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা বা আর্থ্রাইটিসজনিত ব্যথায় গরম পানির সেঁক সবচেয়ে কার্যকর। হাঁটুব্যথার রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন। পাশাপাশি ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম করলে হাঁটুব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।

● হাড়ের ক্ষয়জনিত কারণে হাঁটুতে ব্যথা হলে অনেক সময় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় রোগীর অস্থিসন্ধিতে ইনজেকশন দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় শেষ চিকিৎসা হিসেবে হাঁটু প্রতিস্থাপন করা দরকার হয়। তবে ওজন কমানো ও দৈনন্দিন জীবনধারায় পরিবর্তন না আনতে পারলে হাঁটুব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া কঠিন।

মো. সাইদুর রহমান, ফিজিওথেরাপিস্ট ও চেয়ারম্যান, রিঅ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি হা

মানবদেহে যতগুলো জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধি রয়েছে তার মধ্যে হাঁটু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি জয়েন্ট। হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন অনেকেই।

এ সম্পর্কে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুর কেটিপিএইচের রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান এবং এনাম মেডিকেল কলেজের রিউমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ‍্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. হাবিব ইমতিয়াজ আহমাদ

হাঁটু ব্যথা কেন হয়ঃ

সম্মানিত পাঠক বন্ধুগণডা. হাবিব ইমতিয়াজ বলেন, হাঁটু শরীরের ওজন বহন করে, হাঁটুতে যদি ব্যথা হয় সেটি যে কারণেই  হোক না কেন তা দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। নানাবিধ কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে। বয়সভেদে, লিঙ্গভেদে একেক সময় একেক ধরনের কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে। যেমন-

১. বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাঁটু ব্যথার অন্যতম কারণ হচ্ছে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা বয়সজনিত বাত। বয়স বাড়ার সঙ্গে হাঁটুর জয়েন্ট ক্ষয় হতে থাকে এবং ব্যথা হয়।

২. বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, স্পন্ডাইলোআর্থ্রাইটিসের কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে।

৩. হাঁটুর ব্যথার আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে আঘাতজনিত কারণ। অনেক সময় অ্যাথলেট বা খেলোয়ারদের লিগামেন্ট ইনজুরি হয়, আঘাতের কারণে হাঁটুর হাড়ের ফ্র্যাকচারের কারণে ব্যথা হতে পারে।

৪. সংক্রমণজনিত কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে, যেটিকে সেপটিস আর্থ্রাইটিস বলে। কোনো ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ থেকে হাঁটুর ব্যথা হয়।

৫. যক্ষ্মা বা টিবি একটি সংক্রামক রোগ, হাঁটুতে টিবি রোগের সংক্রমণজনিত কারণে ব্যথা হতে পারে।

৬.  বিভিন্ন ধরনের রক্তরোগ যেমন- হিমোফিলিয়া, লিউকোমিয়া, লিম্ফোমার কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে।

৭. শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায় বিশেষ ধরণের হাঁটু ব্যথা হয়, হাঁটুর চারপাশে ব্যথা হয়, হাঁটুতে চাবানো বা কামড়ানোর মতো ব্যথার অনুভূতি হয়, ম্যাসাজ করে দিলে আরামবোধ হয়। ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে।

৮.  হাড়ের টিউমার, শরীরের অন্যান্য স্থানে হওয়া টিউমার যদি হাঁটুতে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে হাঁটু ব্যথা হতে পারে।

হাঁটু ব্যথার কারণ অনেক। সাধারণত অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা বয়সজনিত বাতে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে হাঁটুর ব্যথা সবচেয়ে বেশি হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে হাঁটুর গঠনে পরিবর্তন আসতে শুরু করে, শরীরের ওজন বেড়ে যায়, হাঁটুর ওপর চাপ পড়ে সেসব কারণে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বেশি দেখা যায়। অন্যান্য বয়সেও এটি হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি হয় বয়স্কদের।

 পরিশেষেঃ  

প্রিয় বন্ধুগণ আশা করি উপযুক্ত পরিচিতি সম্পন্ন করার পর হাঁটুবে তার সংক্রান্ত কারণ এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সুন্দরভাবে বুঝতে পেরেছেন। সম্পন্ন প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি খোদা হাফেজ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *