ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

স্মার্টকার্ড হারিয়ে গেলে অথবা সংশোধনের পর নতুন করে কার্ড পাওয়ার উপায়।

আসসালামু আলাইকুম আশা করি আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে সকলে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজকের আলোচনার বিষয়।স্মার্ট কার্ড হারিয়ে গেলে অথবা সংশোধনের পর নতুন কার্ড পাওয়ার উপায় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিচের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাদের স্মার্ট কার্ড হারিয়ে গেছে কিংবা স্মার্ট কার্ডের মধ্যে ভুল ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাই সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি স্মার্ট কার্ড হারিয়ে গেলে অথবা সংশোধন করার পর নতুন কার্ড কিভাবে পাবেন সে সম্পর্কিত বিস্তারিত খুব সুন্দরভাবে নিচে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই সম্পন্ন প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ার আহ্বান জানিয়ে শুরু করছি।

স্মার্ট আইডি কার্ডের অনলাইন সেবাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সেবা হলো জাতীয় পরিচয়পত্র বা এর তথ্য-উপাত্ত সংশোধন। বাংলাদেশ এনআইডি পোর্টাল থেকে খুব সহজেই এই সেবাটি পাওয়া যেতে পারে। এর জন্য নিচের ক্রমধারাটি অনুসরণ করতে হবে-

১। এনআইডি নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা

। স্মার্ট আইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা প্রদান

৩। প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র আপলোডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোর সম্পাদন

এই পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদনের নির্ধারিত কার্যদিবস পর মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে ফি পরিশোধের সময় যে মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছিল তাতে সংশোধন অনুমোদনের বার্তা আসবে। সেই সঙ্গে সংশোধিত এনআইডি কার্ডটিও ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করা হবে। অতঃপর সেটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করার পর লেমিনেটিং করে ব্যবহার যোগ্য করা যাবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, ইলেক্ট্রনিক চিপযুক্ত সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পাওয়ার জন্য প্রার্থীকে তার ভোটার অঞ্চল থেকে সরাসরি গিয়েই সংগ্রহ করতে হবে

স্মার্ট আইডি কার্ডসংশোধন ফি ও কার্যদিবসঃ

ভোটার আইডি কার্ডসংশোধন ফি মূলত ২টি ক্ষেত্রে ধার্য হয়ে থাকে।

১। স্মার্টকার্ড-এর সামনের ও পেছনের পৃষ্ঠে কিছু তথ্য প্রদর্শন করা থাকে যেগুলো নিবন্ধনের সময় নাগরিকরা ফরম-২-এর মাধ্যমে প্রদান করে থাকেন। এগুলোর মধ্যে সামনের পৃষ্ঠে বাংলা ও ইংরেজিতে জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর নাম, বাংলায় পিতা ও মাতার নাম, ইংরেজিতে জন্ম তারিখ ও এনআইডি নাম্বার, স্বাক্ষর এবং পেছনে বাংলায় ঠিকানা, ইংরেজিতে রক্তের গ্রুপ ও জন্মস্থান অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর মধ্যে যেকোনো তথ্য পরিবর্তন করতে হলে প্রথমবার আবেদনের সময় ২৩০ টাকা, দ্বিতীয়বার ৩৪৫ টাকা এবং তারপর থেকে প্রতিবার আবেদনের জন্য ৫৭৫ টাকা জমা দিতে হবে।

২। নিবন্ধনের সময় নাগরিকরা সেই ফরম-২-এর মাধ্যমে কিছু তথ্য প্রদান করেন, যেগুলো এনআইডি কার্ডে প্রদর্শন করা থাকে না। যেমন- প্রার্থীর পেশা, পাসপোর্ট ও মোবাইল নাম্বার, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি। এগুলোর সংশোধন ফি ১১৫ টাকা। ভোটার আইডি কার্ডসংশোধন ফি বিকাশ, রকেট, ওকে ওয়ালেট ও টি ক্যাশ-এর মাধ্যমে ঘরে বসেই পরিশোধ করা যায়। নির্ধারিত ফি পরিশোধের ৩০ মিনিট পর থেকে তথ্য সম্পাদন শুরু করা যাবে। আর সংশোধিত স্মার্ট আইডি কার্ড হাতে পেতে সর্বোচ্চ ২ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

স্মার্ট আইডি কার্ড সংশোধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

ফি পরিশোধের পরপরই আসবে তথ্য সম্পাদনের স্ক্রিন। এ অংশে তথ্য জমা দেওয়ার পাশাপাশি তথ্যের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র আপলোড করতে হয়।

→ প্রার্থীর নাম অথবা জন্ম তারিখ সংশোধন করতে হলে প্রার্থীর যে কাগজগুলো সংযুক্ত করতে হয় সেগুলো হলো-

১। জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র

২। কমপক্ষে মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষার সনদপত্র

*শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক বা সমমানের নিচে হলে এবং প্রার্থী সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, আধা-স্বায়ত্বশাসিত অথবা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থায় কর্মরত হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে

চাকরির বই বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) বা ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট বা ট্রেড লাইসেন্স লাগবে।

৩। বিবাহিতদের ক্ষেত্রে স্ত্রী বা স্বামীর এনআইডি কার্ড এবং কাবিননামার সত্যায়িত কপি লাগবে।

*বিবাহ সংক্রান্ত কোন কারণে নারীদের নামের পরিবর্তন করতে হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কাবিননামা বা তালাকনামা বা স্বামীর মৃত্যু সনদ, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক হলফনামা বা বিবাহ বিচ্ছেদ ফরমানের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

৪। ধর্ম পরিবর্তন অথবা অন্য কোন কারণে পুরো নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট কর্তৃক হলোফনামা, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি, ওয়ারিশ সনদপত্র, ইউনিয়ন বা পৌর বা সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রার্থীর নাম সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র বা চাকরির বই বা এমপিও বা ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।

→ পিতা বা মাতার নাম সংশোধনের সময়, যদি পিতা বা মাতার নাম উল্লেখ থাকে তবে প্রার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের সনদপত্র, প্রার্থীর পিতা, মাতা, ভাই ও বোনের এনআইডির সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

*পিতা বা মাতার নামের পূর্বে ‘মৃত’ সংযোজন করতে হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পিতা বা মাতার মৃত্যু সনদের সত্যায়িত কপি, জীবিত থাকলে সেই সূত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি (ইউনিয়ন পরিষদ)-এর চেয়ারম্যান বা পৌর মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র, পিতা বা মাতার এনআইডি কার্ডের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

→ ঠিকানা সংশোধনের জন্য বাড়ির দলিল বা টেলিফোন, গ্যাস বা পানির বিল, বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র বা বাড়িভাড়ার রশিদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

→ রক্তের গ্রুপ সংশোধনের জন্য প্রয়োজন হবে ডাক্তারি সনদপত্র।

→ প্রার্থীর সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধন করার জন্য।

এ কাগজগুলো যারা সত্যায়িত করতে পারবেন তারা হলেন সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান।

শেষাংশ

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

প্রিয় বন্ধুগণ লাইফস্টাইল ড্রেস সম্পর্কিত কিছু তথ্য নিচে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যারা এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

স্মার্ট কার্ড হারিয়ে গেলে বা তথ্য সংশোধনের পর নতুন করে স্মার্ট কার্ড পাওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী, একজন নাগরিককে জীবনে মাত্র একবার স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয়। হারিয়ে গেলে বা সংশোধনের পরে শুধুমাত্র লেমিনেটেড এনআইডি কার্ড ইস্যু করা হয়।

nid

স্মার্ট কার্ডে চিপ সংযুক্ত থাকে, যেখানে আইরিশের ছাপ, আঙুলের ছাপসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষিত থাকে। তবে লেমিনেটেড এনআইডি কার্ডে এসব তথ্য থাকে না। তবুও, লেমিনেটেড এনআইডি কার্ড ব্যবহার করেও সরকারি বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করা সম্ভব।

কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ‘রিইস্যু রেজিস্ট্রেশন’ ও ‘রিইস্যু আবেদন’ সম্পন্ন করতে হবে। পরে অনলাইন থেকে বা উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে লেমিনেটেড এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করা যাবে।

স্মার্ট কার্ড এবং লেমিনেটেড এনআইডির নম্বর একই থাকে। যদি স্মার্ট কার্ডের নম্বর মনে না থাকে, তাহলে জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে এনআইডি নম্বর উদ্ধার করা সম্ভব। পরে সেই নম্বর ব্যবহার করে অনলাইন থেকেই কার্ড সংগ্রহ করা যাবে।

বর্তমানে একটি স্মার্ট কার্ড তৈরি করতে সরকারের অনেক ব্যয় হয়। তাই নতুন করে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে নীতিমালায় পরিবর্তন হলে পুনরায় স্মার্ট কার্ড পাওয়ার সুযোগ মিলতে পারে।

পরিশেষেঃ

সম্মানিত পাঠক বন্ধুগণ আশা করি উপরোক্ত প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার পর স্মার্ট কার্ড হারিয়ে গেলে বা স্মার্ট কার্ডে কোন প্রকার ত্রুটি থাকলে তার সংশোধন করার পর নতুন কার্ড কিভাবে হাতে পাবেন সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য এবং খুঁটিনাটি বিষয়গুলো উপরে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এবং সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনি অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন। এবং সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি খোদাহাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *